বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৬ অপরাহ্ন
ফজলুল করিম ফারাজী, কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে চুঁই ঝালের চাষ করে বাড়তি আয় করছে এখানকার কৃষকেরা। বাড়ির উঠানে পরিত্যাক্ত জমিতে আম গাছ, সুপারি গাছে পরজীবি লতা জাতীয় চুঁই ঝাল গাছ লাগিয়ে বছরে ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় করছেন তারা। সার কীটনাশক ছাড়া সামান্য পরিচর্যা করে চুঁই ঝাল চাষাবাদ করা যায় বলে দিন দিন চুঁই ঝাল চাষে আগ্রহ বাড়ছে এখানকার কৃষকদের।
কথা হয় চাকির কুঁটি গ্রামের মোঃ শহিদুল ইসলাম বাচ্চু মিয়ার সাথে তিনি দৈনিক প্রলয়ের প্রতিবেদককে বলেন,আমার দুই বিঘা জমিতে আম ও সুপারির বাগানে চুঁই ঝালের গাছ লাগিয়েছি।গাছ লাগানোর তিন বছর পর থেকে চুঁই ঝাল বিক্রি শুরু করেছি। এ গাছে সার ও পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে না। দাম ভালো পাওয়া যায়। প্রতি মন চুই ঝাল ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে থাকি। এছাড়া চুঁই ঝাল গাছের বয়স ভেদে একটি গাছে থাকা চুঁই ঝাল ৫ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকি। সুপারি ও আম বিক্রির পাশাপাশি চুঁই ঝাল বিক্রি করে বেশ ভালোই চলছে আমাদের সংসার।
আরেক কৃষক মোঃ মকবুল হোসেন দৈনিক প্রলয়কে বলেন, চুঁই ঝাল মুলত মসলা জাতীয় উদ্ভিদ।বাজারে প্রতি কেজি চুঁই ঝাল ১ শো টাকা দরে বিক্রি করে থাকি।মাংস রান্না ও ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে লোকমুখে শুনেছি।আমার সুপারির বাগানে ৯০ টির মত গাছ আছে। গত দু বছর ধরে চুঁই ঝাল বিক্রি করে আসছি।ভালো আয় হচ্ছে। আগামীতে গাছের সংখ্যা আরো বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
কৃষক সাইদুল ইসলাম দৈনিক প্রলয়কে বলেন, চাকিরকুঁটি গ্রামটি বর্তমানে চুঁই ঝালের গ্রাম নামে পরিচিত। আমাদের এ গ্রামে প্রত্যেক কৃষকের বাড়িতে চুঁই ঝালের আবাদ হচ্ছে।স্থানীয় ভাবে বাজার চাহিদা থাকলে আরো লাভবান হওয়া যেত।
নাগেশ্বরী উপজেলার উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ মোস্তাফিজার রহমান দৈনিক প্রলয়কে বলেন, নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশি ইউনিয়নের চাকিরকুঁটি গ্রামটিতে প্রত্যেক বাড়িতে চুঁই ঝালের চাষ হচ্ছে। এটি একটি মসলা জাতীয় ও ওষুধিগুণ সম্পন্ন গাছ। দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে চুঁই ঝালের চাহিদা বেশি। এ গাছে খরচ নেই লাভ ভালো। ফলে এ গ্রামের প্রত্যেক কৃষক ভালো লাভবান হচ্ছে।কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সকল প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন
রাস্তার পাশে গাছ লাগানো যেন থামছেই না, কৃষিজমির ওপর বিরূপ প্রভাব
কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীতে ইলিশ রক্ষা অভিযানের পুলিশের ওপর হামলা, ২ পুলিশ নিখোঁজ
শীত মৌসুমে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে যে নির্দেশনা দিলো মন্ত্রণালয়
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ উদ্ভিদবিদ অধ্যাপক মির্জা নাসির উদ্দীন বলেন,চুঁই ঝাল মসলা জাতীয় উদ্ভিদ।এটি রান্নার মসলা হিসাবে চাহিদা আছে। এছাড়া গাছটি ওষুধি গাছ হিসেবে বাত ব্যাথা নিরাময়ে কাজে লাগে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কুড়িগ্রামে চুঁই ঝাল চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। বাড়তি খরচ না থাকায় চুঁই ঝাল বিক্রি করে তারা সংসারে ভালো আয় করতে পারছে। জেলার ৪ টি উপজেলা নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ি, রাজারহাট, ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় ১৪ হেক্টর জমিতে চুঁই ঝালের চাষ হচ্ছে। এ ছাড়া অনান্য উপজেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে চুঁই ঝালের চাষ হচ্ছে বলে জানান তিনি।